হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরে প্রেমের তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার কারণেই খুন হয়েছে শিশু তাকমিনা আক্তার লিজা (৯)।বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পিবিআই হবিগঞ্জ ইউনিট কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিংয়ে এ দাবি করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পুলিশ সুপার মো. আল মামুন শিকদার।
তিনি জানান, এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলেন, জেলার মাধবপুর উপজেলার গন্ধব্যপুর গ্রামের সফি মিয়ার ছেলে বাহার উদ্দিন (২১), সাইদুর রহমান প্রকাশ মোহন মিয়ার কন্যা খাদিজা আক্তার তাজরিন (২৭), সাইদুর রহমান মোহনের স্ত্রী আমেনা খাতুন আনজু (৫০)। তাদেরকে বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কোর্টে প্রেরণ করা হয়।
প্রেসবিফিং গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার মো. আল মামুন শিকদার জানান, আসামি খাদিজা আক্তার তাজরীনের ছোট ভাই তাকবীর হাসানের (২০) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী বাড়ীর জনৈক সিরাজ মিয়ার মেয়ে শান্তার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। একদিন সন্ধ্যায় তাদের বাড়ির পাশে শান্তা ও তাকবীর দেখা করার সময় নিহত শিশু লিজা তাদের দেখে ফেলে। পরবর্তীতে লিজা তাদের প্রেমের সম্পর্কের তথ্য শান্তার মায়ের কাছে ফাঁস করে দেয়।
বিষয়টি জানার পর তিনি (মা) শান্তাকে শাসন করেন এবং শান্তার মুঠোফোনটি কেড়ে নেন। এ কারণে শান্তা-তাকবীরের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এরই প্রেক্ষিতে তাকবীর শিশু লিজার উপর ক্ষুব্ধ হয়। ২০২১ সালের ২১ জুলাই (ঈদের দিন) সকালে লিজা দোকান থেকে নুডুলস কিনে বাড়ি ফিরছিলো। এ সময় তাকবীর তাকে চকলেটের লোভ দেখিয়ে তাদের বাড়ির মাটির ঘরে নিয়ে গলা টিপে হত্যা করে।
লিজার মরদেহ সে তার পরিবারের সহায়তায় বস্তাবন্দি করে বসতঘর সংলগ্ন গোয়ালঘরে লুকিয়ে রাখে। হত্যার ৩ দিন পর (২০২১ সালের ২৪ জুলাই) দুর্গন্ধ বের হলে মরদেহটি তাকবীর তার পরিবারের লোকজন ও আসামি বাহার উদ্দিনের সহায়তায় রাতে আইলাবই গ্রামের একটি বাঁশ ঝাড়ে ফেলে দেয়। পরে লোকজন মরদেহ দেখে মাধবপুর থানা পুলিশকে খবর দেয়। এ ব্যাপারে লিজার পিতা সাগর আলী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরে এ মামলাটি পিবিআই হবিগঞ্জে স্থানান্তর করা হয়।
পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের দিকনির্দেশনায় হবিগঞ্জ ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মো. আল মামুন শিকদারের তত্ত্বাবধানে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. শাহনেওয়াজ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকান্ডে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেন।
আল মামুন শিকদার বলেন, ৭ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃত আসামি বাহার উদ্দিন ও খাদিজা আক্তার তাজরীন এই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ মামলায় জড়িত বাকীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।